Monday, September 29, 2014

একটি ফেসবুকীয় কঠিন গপ্প

এক সুশ্রী বালিকা ভিতরকার বাক্সে (ইনবক্সে) তাহার গোসলখানায় (বাথরুমে) স্বহস্তে গৃহীত খোমাছবির সূত্র (সেলফি, প্রোফাইল পিকের লিঙ্ক) দিয়া কহিল, ক্যামন হইয়াছে তাহা যেন বলিয়া উহারে ধইন্ন করি।

মুহূর্তের ভগ্নাংশের মধ্যে বুঝিলাম, বালিকা একটি পছন্দ (লাইক) চাহিতেছে।

কিন্তু পছন্দ (লাইক) তো আর ব্যাংকনোটের মতন নয় যে লিখা থাকিবে - চাহিবামাত্র বালিকাকে দিতে বাধ্য থাকিবো। অতএব কথা ঘুরাইলাম। কহিলাম, চিত্র ভালোই হইয়াছে। কেবল চিত্রগ্রহণে বিচিত্রতা নাই! বালিকা শুনিয়া আর কিছু কহিল না। ভাবিলাম, বাঁচিয়াছি।

কিন্তু কিসের কি?! কিছুক্ষণ পর বালিকা নতুন এক খোমাচিত্র আরও বিচিত্র ভঙ্গিতে ধারণ করিয়া তাহা কিরূপ হইয়াছে জানিতে চাহিলো। মনে মনে প্রমাদ গুনিলাম। প্রকট সংকটেই কট খাইয়াছি।

এদিকে বালিকা তো নাছোড়, খোমাচিত্র কিরূপ হইয়াছে - আর কিরূপে তুলিবে - কোন কোণা দিয়া তুলিলে আরও উত্তম দেখাইবে ইত্যাদি নানাবিধ মিষ্ট জিজ্ঞাসায় অধমকে অতিষ্ঠ করিয়া তুলিয়াছে।

বালিকা যাহা বলে তাহাতেই হু হ্যাঁ করিয়া দিব্যি সারিয়া যাইতেছিলাম বলিয়াই কিনা জানি না, বালিকা এবারে চক্ষুর মাথা খাইয়া তাহার খোমাচিত্রে পছন্দ চাহিয়া বসিলো। এতক্ষণ হু হ্যাঁ করিতেছিলাম, এইবারে তাহার সহিত আমতা আমতা লাগাইলাম। তদুপরি বালিকার কুনু মায়া দয়া নাই, তাহার এক্কখানা পছন্দ চাইই চাই।

এইবারে মোক্ষম চাল চালিলাম। কহিলাম চিত্র সুন্দর, চিত্রের বিষয়বস্তুও সুন্দর। তবে কিনা চিত্রের গ্রহণযন্ত্র (ক্যামেরা) উত্তম নহে। তাই চিত্র পছন্দযোগ্য হয় নি। কিন্তু এই বয়ানেও বালিকার মন গলিল না, বালিকা তাহার পছন্দ আদায় করিতে দৃঢ়সংকল্প। সে পুনঃপুনঃ পছন্দ দাবী করিতে লাগিলে, বার্তা অদেখা রাখিয়া কাটিয়া পড়িলাম।

কিছু পরে আবার আসিয়া দেখিলাম, বালিকা খোমাবই থেকে অধমরেই কাটিয়া দিয়াছে। অনুরোধের ঢেঁকি না গিলিবার খুশীতে নীচে নামিয়া দুটাকার চর্বণযোগ্য চোষ্যবস্তু (চুইংগাম) কিনিয়া খাইলাম। মুড়ি কিনিতে চাহিয়াছিলাম, কিন্তু ধারে কাছে মুড়ি বিক্রেতা না পাওয়ায় উহা আর আজি খাওয়া হইলো না।

পুনশ্চঃ
১) এক বন্ধু অনুরোধ অনুযোগ করেছিল, খোমাবইয়ে হালকা পাতলা নয় বরং কঠিন-জীবনমুখী-বাস্তবসম্মত এবং মজার কিছু লিখতে। খোমাবইয়ে জীবন পাঠ নিয়ে তো তেমন কিছু পাই নি। সেজন্য যেটাতে মজা পেয়েছি তাই দিলাম কঠিন খাস্তা গুরুচণ্ডালী ভাষায়। (দৌড় যে অদ্দুরই) ;)

২) ভালো লাগলে এমনিতেই লাইক দেই। লাইক নিয়া বাড়িও করবো না - কব্বরেও যাব না। তাই আঁতকা অনুরোধের আগে ভেবে দেখাবেন আপনার ঢেঁকিখানা গেলার মতো কি না। নতুবা এই অকম্মার ঢেঁকিকে লাইক দেন বলে আতংকে ফেলে দেবেন না। (এইটা বিশেষ শ্রেণীর জন্য; ওই যে আছে না?! লাইক মি - লাইকু জাতীয়) ;)

No comments:

Post a Comment