Wednesday, April 22, 2015

একটি শিশুর পিশুজনিত বাজেগল্প

প্রথম শ্রেণীতে পড়ার সময়কার কথা (তখন শ্রেণী বানান শ্রেণীই ছিল, শ্রেণি হয় নি)।
বাসার ছোট নবাব হিসেবে নিয়মিত থোক বরাদ্দ ছিল টফি - একটু ভালো কিছু করলে আজিজ মিল্ক কিংবা অরেঞ্জ মিমি চকলেট - আরও ভালো কিছু করলে ক্যাডবেরি।

মানে, ভালো - ভালোতর - ভালোতম; এই আর কি!!

একসময় খেয়াল করলাম রাতে বিছানায় পিশু না করলে সেদিন বাসায় ক্যাডবেরি আসতেছে!! আর করলে কাইগুই করে বিংগো ক্যান্ডি আসে। ক্যাডবেরির অমোঘ আকর্ষণে আলসেমি পরিত্যাগ করে চোখভরা ঘুম নিয়েও মাঝরাতে বিছানা ছেড়ে উঠে যথাস্থানে গিয়ে পিশু করে আসতে লাগলাম।

জগতে সব সুখেরই শেষ আছে।
সেই নিয়মেই কিছুদিন পর বাসায় যথারীতি আজিজ মিল্ক আসা শুরু হলো। প্রথমে বুঝি নি, ভেবেছি দোকানে ক্যাডবেরি হয়তো আজ শেষ, কাল নিশ্চয়ই আসবে!! পরের একাধিক দিন আজিজ মিল্ক আসায় অগত্যা বুঝে গেলাম যে "বিছানায় পিশু নিবারণ" কোটায় (Quota) পুরস্কার বিতরণী শেষ।

এবারে বুদ্ধি করে(!) বিছানায় আবার পিশু করলাম দু রাত। এ দুদিন বিংগো ক্যান্ডিও বাসায় আসে নি। তৃতীয় রাতে পিশুটা যথাস্থানে সেরে এলাম, সেদিন ক্যাডবেরি এলো.. এভাবে দু তিন দিন পরপর ক্যাডবেরি ভালোই আসছিল, চলছিল সব কিছু ভালোই..

কিন্তু ওই যে বললাম না?!
জগতে সব সুখেরই শেষ আছে।
সেভাবেই একদিন এই মহান বুদ্ধি পাশের বাসার বন্ধু রে দিয়ে দিলাম। মীর জাফর বন্ধু প্রথম রাতে পিট্টি খেয়েই সব স্বীকার গেলো তার মায়ের কাছে। আর অ্যান্টি এসে ঘসেটি বেগমের মতো হাসতে হাসতে সব বলে দিলো আম্মুকে..

এরপর বাকিটা সে এক করুণ ইতিহাস!!! 
বাসার ছোট নবাবের ক্যাডবেরি স্বাধীনতা হারাবার ইতিহাস.. আর আম্মুর হাতে শলার ঝাড়ু মৃদুমন্দ আন্দোলনের ইতিহাস। যে ইতিহাস এখনো পূর্ণিমা অমাবস্যায় গিরায় গিরায় এসে তাঁর উপস্থিতি জানান দেয়!!!! ;)

পুনশ্চঃ সব চরিত্র কাল্পনিক!!! ;)

No comments:

Post a Comment